রাজশাহীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর দিন কাটে অন্যের দয়াই: থাকেন বস্তিতে!

রাজশাহীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর দিন কাটে অন্যের দয়াই: থাকেন বস্তিতে!

রাজশাহীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর দিন কাটে অন্যের দয়াই: থাকেন বস্তিতে!
রাজশাহীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর দিন কাটে অন্যের দয়াই: থাকেন বস্তিতে!

স্টাফ রিপোর্টার: স্বাধীনতার ৫০ বছরেও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জলিল শাহ এর স্ত্রীর দিন কাটে অন্যের দয়াই, থাকেন বস্তির ঝুপড়ি ঘরে ।

লিংকঃ ৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনের সব কিছু হরিয়ে অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন শহীদ মুক্তিযাদ্ধা জলিল সাহ এর নিঃসন্তান স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুর দেয়া কৃতজ্ঞতা পত্র আর দুই হাজার টাকা ছাড়া বিজয়ের এত বছরেও মেলেনি সরকারী বেসরকারী কোন সহায়তা। রাজশাহী নগরীর তালাইমারি এলাকায় বাদুরতলা বদ্ধভুমির পাশে জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে অনাহারে অর্ধাহারে কেটে গেছে তার ৪০ বছর। বৃদ্ধ বয়সেও দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য অন্যের দুয়ারে দুয়াওে ছুটে বেড়াতে হয় প্রতিনিয়ত। আতিকুল ইসলাম কৌশিকের ক্যামেরায় তোফায়েল হোসেনের বিশেষ প্রতিবেদন।

রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের ধারেই ভাঙ্গাচোরা এই ছোট্ট ঘরেই অস্থায়ী বসবাস বৃদ্ধ আনোয়ারা বেগমের। সহায় সম্বল বলতে নড়বরে ঘুনেধরা একটা চৌকি,থালাবাটি আর একটা বাক্স।প্রতিবেশির দয়ায় বেঁচে থাকা ৭৫ বছর বয়সী এই মানুষটি আজ বড় অসহায়। খুব াল্প বয়সেই বিয়ে হয়েছিল আনোয়ারা বেগমের। সে সময় সব কিছুই ছিল তার। স্বামী ব্যবসা করতেন। নগরীর তালাইমারি বাদুর তলা এলাকাতেই ছিল তার দোতালাবাড়ি। এসব এখন শুধুই স্মৃতি। ভক্সপপ- আনোয়ারা

সুখেই দিন কাটছিল আনোয়ারার। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন টেকেনি তার কপালে। বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার লক্ষে সেদিন বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় মাত্র ৭ বছরের মাথায় পাকিস্থান হানাদার বাহিনির বুলেট কেড়েনেয় জলিল সাহের প্রান। নিমিসেই নিভে যায় আনোয়ারার সুখের প্রদীপ। সেদিনের সেই দঃুসহ স্মৃতি নিয়ে নিঃসঙ্গতায় আজো বেঁচে আছেন আনোয়ারা।

দেশকে ভালোবেসেপ্রান দিয়েছিল তার স্বামী জলিল সাহ। আর স্বামীকে ভালোবেসে ৭৫ বছর বয়সে আজো একা আনোয়ারা। পাকিস্থানী হায়েনাদের হাত থেকে বাঁচাতে স্ত্রীকে রেখে এসে ছিলেন দূর্গাপুরের এক আত্মীয়র বাড়িতে। শেষ দেখায় বলেছিল, বঙ্গবন্ধসহ দেশকে বাঁচাতে যাচ্ছি, হয়তো আর দেখা হবেনা। সেদিনের সেই কথাগুলো আজো স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠে।

সেদিন ভাগ্যগুনে বেঁচে যাওয় সহযোদ্ধা আজিজুল হক আজ পক্ষাঘাত গ্রস্থ। ঘাতকের ছোড়া গুলির ক্ষত চিহ নিয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। বিছানায় শুয়ে থেকেই জানালেন সেদিনের বন্ধু আর ভাই হারানোর গল্প।
জীবন জীবীকার তাগিদে এক সময় বাড়ি বাড়ি গিযে হোমিও ঔষধ বিক্রি করতেন বলে এলাকায় ডাক্তর নানী হিসেবেই পরিচিতি তার। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই হতভাগিনীর জীবন গাড়ীর চাকা আজ থেমে যাওয়ার পথে। তাই প্রতিবেশীরাই তার প্রধান ভরসা।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পুর্তি হোলেও তার ভাগ্যে জোটেনি সরকারী বা বেসরকারী কোন অনুদান । মুক্তিযোদ্ধা নেতারা বলছেন এখনি সময় আনোয়ারাদের জন্য কিছু করার। এসব অবহেলিতদের পাশে এসে দাঁড়াতে সরকার এবং বিত্তবানদের প্রতি আহবার তাদেরর।

প্রমত্ত পদ্মার পানে শুধুই কি নিরবে নিভৃতে চেয়ে থাকা? বিজয়ের আনন্দ উল্লাস ধ্বনীতে হারিয়ে যাবে তার হাহাকার ? জলির সাহের মত লাখো শহিদের রক্ত দিয়ে কেনা বিজয়ের লাল সবুজ পতাকাকি উড়বে না বস্তির জরাজির্ন কুড়ে ঘরে?

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply